রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৮ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম ডেস্ক:
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) অনুষ্ঠিত হলো নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী নৌকা প্রতীক নিয়ে ১ লাখ ৬১ হাজার ২৭৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি তৃতীয় বারের (হ্যাটট্রিক) মতো এই সিটির মেয়র নির্বাচিত হলেন। তার মূল প্রতিদ্ব›দ্বী হাতি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার পেয়েছেন ৯২ হাজার ১৭১ ভোট। আর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাছুম বিল্লাহ (হাতপাখা) পেয়েছেন ৪২৮০ ভোট। ইসি জানিয়েছে নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৫০ শতাংশ। নির্বাচনে কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও ইভিএম-এ ভোট দেয়া নিয়ে ভোটারদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ফলাফল প্রকাশের পর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার বলেছেন, ইভিএম হলো চুরির বাক্স।
গতকাল জাতীয় সংসদের টাঙ্গাইল-৭ আসনের উপ-নির্বাচন ছাড়াও আরো ৫টি পৌরসভায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু সবার দৃষ্টি ছিল নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের দিকে। কোথাও বড় কোনো গোলযোগ হয়নি, প্রার্থীদের পাল্টাপাল্টিতে উত্তাপও ছড়ায়নি, রাজধানী ঢাকার লাগোয়া এক সময়ের বন্দরনগরী নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নতুন জনপ্রতিনিধি বেছে নিতে ভোটগ্রহণ দৃশ্যত হয়েছে শান্তিপূর্ণভাবেই। গতকাল রোববার সকাল ৮টায় ইভিএম-এ সিটির ১৯২ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়; যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে। এবারই প্রথম পুরো নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে ইভিএমে ভোট হলো।
যন্ত্রে চাপ দিয়েই খুব সহজে ভোট দিতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেন অনেকেই। আবার আঙুলের ছাপ না মেলায় বয়স্ক অনেকের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। উৎসবের আমেজে ভোটের মাঠে দিনভর আলোচনায় রইলো ভোটগ্রহণের শ্লথ গতি। ইভিএম মেশিনে ধীর গতিতে ভোট গ্রহণ, বিভিন্ন স্থানে স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজন প্রবেশে বাধাসহ নানা অভিযোগ উঠে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদের শেষের দিকের এই আয়োজন বিতর্কমুক্ত রাখতে ছিল কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় পাঁচ হাজার সদস্য নির্বাচন ঘিরে দায়িত্ব পালন করেন। নির্বাচনে মেয়র পদে ৭ এবং সাধারণ ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১৮২ জন প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেন। মোট ভোটার রয়েছেন পাঁচ লাখ ১৭ হাজার ৩৫৭ জন।
সেলিনা হায়াৎ আইভী সকাল ১০টা ৫০ মিনিটের দিকে নগরীর শিশুবাগ এলাকার আলী আহমদ চুনকা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে তিনি ভোট দেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, জয়ের বিষয়ে আশাবাদী। এরপরেও যে ফলাফলই আসুক না কেন, আমি মেনে নেব। আর স্বতন্ত্র মেয়রপ্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার সকাল ৮টা ২৫ মিনিটে নারায়ণগঞ্জ ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসায় ভোট দেন। এসময় তিনি বলেন, প্রশাসন ডিস্টার্ব করেছে। শত বাধার পরেও আমার নেতাকর্মীরা মাঠে রয়েছে। গ্রেফতার হওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এ সরকারের ক্ষমতা রয়েছে, তাদের ক্ষমতা অপব্যবহারের নজিরও রয়েছে। ক্ষমতার শত অপব্যবহার এর বিপরীতে আমরা ফাইট করে যাব। আমরা শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকব। আমার প্রতি জুলুম অত্যাচার চলেছে। আমার অনেক লোককে গ্রেফতার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমার সাতজন লোক গ্রেফতার হয়েছে। বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও গণমাধ্যমকর্মী উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, একটি কেন্দ্রে তার এজেন্টকে ঢুকতে দেয়া হয়নি। তাছাড়া আইডি কার্ডের জন্য অনেক কেন্দ্রে ভোটারদের ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না।
শহরের আদর্শ স্কুল নারী কেন্দ্রে মনোয়ারা বেগম নামের একজন ভোটার বেলা সোয়া ১১টার দিকে ভোট দিতে আসেন। তিনি শুনতে পান, আনসার সদস্য নূর জাহান বলছেন, সবাই সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে আসুন। নতুবা দুই ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হবে। কারণ বুথে অনেক ভোটারেরই আঙুলের ছাপ মিলছে না। এটা শোনার পর ১৫ মিনিট লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে আঙুলের ছাপ দিতে যান মনোয়ারা বেগম। তখন ছাপ মিলছিল না। সব আঙুলে কয়েকবার চেষ্টা করেও ভোটগ্রহণের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ব্যর্থ। এক পর্যায়ে তারা বলেন, আপনি একটু পরে আসেন। এ সময় আনসার সদস্য নূর জাহানের পরামর্শে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে আসেন মনোয়ারা। আবার সব আঙুলে চেষ্টা চলে। এবারও ব্যর্থ! এরপর ভোটগ্রহণ কর্মীরা যতœ করে মনোয়ারার আঙুল জেল দিয়ে মোছেন। এরপর চেষ্টা করে তাতে সফল হয়নি। এ সময় লাইনে দাড়িয়ে থাকা অন্যরা কিছুটা বিরক্ত হলে বুথের ভেতর পাশে এক জায়াগায় দাঁড় করিয়ে মনোয়ারাকে অপেক্ষা করতে বলেন কর্মকর্তারা। কয়েক মিনিট পরে আবার চেষ্টায়ও আঙুলের ছাপ মেলেনি। হতাশ হয়ে ১২টার দিকে ভোট না দিয়েই বেরিয়ে যান মনোয়ারা। ভোট গ্রহণ কর্মকর্তারা জানান বয়স্ক প্রায় সব ভোটারেরই সমস্যা হচ্ছে। তিনজনের ১০ মিনিট করে চেষ্টায় সফল হয়েছেন। মনোয়ারারটা একেবারেই সম্ভব হয়নি। মনোয়ারা বলেন, কাজ করলে তো হাতের রেখা কিছুটা মুছে যায়। এখন আমার কি করার আছে? কষ্ট করে এসে ভোট দিতে পারলাম না। প্রিজাইডিং কর্মকর্তা শামছুল হক আঙুলের ছাপ না মেলাসহ ইভিএমে ধীরগতির কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, মক ভোট করেছেন এই কেন্দ্রে। মাত্র তিনজন ভোটার এসেছিলেন। ওই কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ৩২৫৫। ১১টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৩৮৫টি।
নারায়ণগঞ্জ সিটির বন্দর গার্লস হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রেও নারী ভোটারদের বিপাকে পড়ার তথ্য পাওয়া গেছে। এই কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা চার হাজার ১২৯ জন। সবাই নারী ভোটার। এখানে ১০টি বুথে ভোট হচ্ছে। বেলা দশটা পর্যন্ত প্রতিটি বুথে ২২ থেকে ২৬ ভোট পড়েছে। অনেকের ইভিএমে ফিঙ্গার প্রিন্ট মেলেনি। নারায়ণগঞ্জের বন্দর বিএম ইউনিয়ন উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের (পুরুষ কেন্দ্র) ২ নম্বর ভোটকক্ষে নৌকার এজেন্ট ছিল না। ওই কক্ষে নৌকার কোনো এজেন্ট আসেননি বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মো. মোস্তফা।
সোনারগাঁ থেকে বন্দরের মদনগঞ্জে ভোট দিতে এসেছেন গৃহিণী উর্মিলা আক্তার। বেলা ১১টায় এসে দুপুর দেড়টার দিকে ভোট কক্ষে ঢুকতে পারলেও ভোট দিতে পারেননি তিনি। দুপুর দুইটার দিকে কেন্দ্রের বাইরে দাঁড়িয়ে কথা হলে তিনি বলেন, আমার আঙুলের ছাপ নেয়ার পর ছবিও আসছে। কিন্তু ভোট দিতে পারিনি। কেন পারিনি তা বুঝি নাই। ওই কেন্দ্রের বাইরে তখন শত শত ভোটার দীর্ঘ সময় ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা আনসার ও পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় ভোটারদের সঙ্গে আনসার সদস্যদের ধাক্কাধাক্কি হয়।
প্রিজাইডিং অফিসারের অসহায়ত্ব প্রকাশ :
নাসিকের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের শান্তিনগর প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নারীদের ভোটগ্রহণে দেরি এবং বিশৃঙ্খল পরিবেশের কারণে অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন প্রিজাইডিং অফিসার নাহিদুল ইসলাম। বিকাল ৩টায় ভোট গ্রহণের শেষ বেলায় অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন তিনি। তিনি বলেন, একজন নারী ভোটার ২০ মিনিটও সময় লাগাচ্ছে। আমি অসহায়। নারীদের অনেক চেষ্টা করে লাইনে রাখা যায় না। তারা একেবারেই বোঝে না। তারা চায় আমরা তাদের ভোট দিয়ে দেই। আমাদের ডাকে ভোট কীভাবে দেবে দেখিয়ে দেয়ার জন্য। এখানে ভোটারদের এই বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তব্যরত পুলিশ-আনসারদের। ভোটারদের অভিযোগ তিন-চার ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়েও দিতে পারেননি ভোট।
সকাল ৮টার দিকে দুই বছরের ছেলেকে কোলে করে এই কেন্দ্রে ভোট দিতে আসেন আসমা বেগম। সাড়ে ছয় ঘণ্টার ক্লান্তিকর অপেক্ষা শেষে দুপুর আড়াইটার দিকে তিনি ভোট কক্ষে প্রবেশ করেন। আরো ২০ মিনিট অপেক্ষার পর দুই দফার চেষ্টায় ভোট দিতে পারেন তিনি।
এক ভোটার অভিযোগ করে বলেন, সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে ইভিএম মেশিনের জটিলতায় ভোট দিতে পারিনি। হাতের চাপ দিলে নাম ও ছবি আসলেও আমাকে বুথ থেকে বলে সমস্যা হচ্ছে পরে আসেন। এ বিষয়ে প্রিজাইডিং অফিসার জানান, মাঝে মাঝে নাম আসলেও ভোটগ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এরকম সমস্যায় আরো পাঁচজন ভোট দিতে পারেননি।
তৈমূরের পথ আটকে নৌকার স্লোগান ছাত্রলীগের :
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়রপ্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকারের পথ আটকে নৌকার স্লোগান দিয়েছেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এসময় তৈমূরের কর্মী-সমর্থকরাও পাল্টা স্লোগান তোলেন। নগরীর ৯নং ওয়ার্ডের আলম পাঠানতলী স্কুল কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে ফেরার পথে তৈমূরকে ঘিরে ধরে সেলিনা হায়াৎ আইভীর নৌকা প্রতীকের কর্মী-সমর্থকরা। এসময় পেছন দিক থেকে নৌকার স্লোগান দেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। তৈমূরের সঙ্গে থাকা নেতাকর্মী ও সমর্থকরাও তখন হাতি মার্কার পক্ষে স্লোগান তোলেন। এর কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন তৈমূর। তিনি এ ধরনের ঘটনাকে বিব্রতকর বলে মন্তব্য করেন।
কাউন্সিলর প্রার্থীর স্ত্রীসহ সমর্থকদের ওপর হামলা :
নারায়ণগঞ্জের খানপুরের বার একাডেমি স্কুল কেন্দ্রে কাউন্সিলর প্রার্থী শওকত হাসেম শকুর (লাটিম প্রতীক) স্ত্রী দিপা হাসেমসহ সমর্থকদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। কাউন্সিলর প্রার্থী হাজী মো. সেলিম খান (ঘুড়ি প্রতীক) এ হামলা চালিয়েছেন বলে শওকত হাসেম অভিযোগ করেছেন।
বন্দর ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের হাজি সিরাজ উদ্দিন মেমোরিয়্যাল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে লাটিম ও ঠেলাগাড়ি প্রতীকের সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। সকাল সাড়ে ১০টায় কেন্দ্রের সামনের সড়কে এই ঘটনা ঘটে।
গোপন বুথে শুধু ভোটারের যাওয়ার কথা। কিন্তু নারায়ণগঞ্জের নবীগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পুরুষকেন্দ্রের ২ নম্বর কক্ষের গোপন বুথে ভোটারের সঙ্গে একজন সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে প্রবেশ করতে দেখা গেছে।
শৃঙ্খলা ফেরাতে লাঠিচার্জ :
ছোটখাটো দু’একটি ঘটনা ছাড়া এখন পর্যন্ত অপ্রীতিকর কোনো ঘটনার অভিযোগ পাওয়া যায়নি। ৫ নম্বর ওয়ার্ড সিদ্ধিরগঞ্জ রেবতী মোহন পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ভিড় বেড়ে যায়। কেন্দ্রের বাইরে ভিড়ের কারণে জটলায় পড়ে যান ভোটাররা। এমন সময় র্যাব-১১ এর একটি টহলরত গাড়ি ও বিজিবির গাড়ি কেন্দ্রটির সামনে আসে। কেন্দ্রের সামনে অতিরিক্ত জটলা দেখতে পেয়ে লাঠিচার্জ করে র্যাব, বিজিবি ও পুলিশের সদস্যরা। লাঠিচার্জের পাশাপাশি সবাইকে সতর্ক করে গেটের বাইরে বের করে দেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
অটোরিকশার কদর :
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন (নাসিক) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পুরো শহরেই কদর ছিল ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার। ভোটাররা অটোরিকশায় চড়ে কেন্দ্রে এসেছেন। ভোট দিয়ে আবার অটোরিকশায় বাড়ি ফিরেছেন। তবে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার অভিযোগ করেছেন ভোটাররা। সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় আজিজুল হাকিম নামে এক রিকশাযাত্রী বলেন, আজকে রিকশার বেশি চাহিদা থাকায় তারা বেশি ভাড়া নিচ্ছে। ভাড়া নিয়ে তাদের সঙ্গে তর্কাতর্কিও করা যাচ্ছে না। তিনগুণ থেকে চারগুণ পর্যন্ত ভাড়া নিচ্ছে তারা।
জীবনের প্রথম ভোট ইভিএমে দিতে পেরে আমি ধন্য :
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ মিজমিজি পশ্চিমপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে জীবনের প্রথম ভোট দিতে পেরে বেশ উচ্ছ¡াস প্রকাশ করেছেন নীলিমা আক্তার হেমী। তিনি বলেন, এখানে আমি আমার প্রথমবারের মতো ভোট দিয়েছি। আমরা যারা তরুণ প্রজন্মের রয়েছি তারা সবাই ইলেকট্রনিক ডিভাইসের সঙ্গে পরিচিত। এ কারণে আমাদের ভোট প্রদান করতে কোনো সমস্যা হয়নি এবং সময়ও অনেক কম লেগেছে। আমার এক থেকে দুই মিনিট সময় লেগেছে ভোট প্রদান করতে। ইভিএমে আমি ভোট দিতে পেরে নিজেকে ধন্য এবং গর্বিত মনে করছি। ইভিএম সম্পর্কে এই তরুণী বলেন, নারায়ণগঞ্জে ইভিএমে এই প্রথম ভোট দিচ্ছেন ভোটাররা। আমি মনে করি, প্রার্থীরা যখন বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চান তখন থেকেই তাদের উচিত ভোটারদের ইভিএম সম্পর্কে ধারণা দেয়া।
নারায়ণগঞ্চ সিটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ৯ সংস্থার ৪২ পর্যবেক্ষক কাজ করেন। সংস্থাগুলো হলো জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদ (জানিপপ), সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন, আইন সহায়তা কেন্দ্র (আসক) ফাউন্ডেশন, সমাজ উন্নয়ন প্রয়াস, তৃণমূল উন্নয়ন সংস্থা, তালতলা যুব উন্নয়ন সংগঠন, রিহাব ফাউন্ডেশন, বিবি আছিয়া ফাউন্ডেশন এবং মানবাধিকার ও সমাজ উন্নয়ন সংস্থা (মওসুস)।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন মানেই নাটকীয়তা আর উত্তেজনা। ২০১১ সালে ও ২০১৬ ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী মেয়র নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগ যে বছর ছয় দফা ঘোষণা করে সেই বছর ১৯৬৬ সালের ৬ জুন সেলিনা হায়াৎ আইভীর জন্ম। ১৯৯২ সালে এমবিবিএস পাস করে দেশে এসে ঢাকার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্নি সম্পন্ন করেন আইভী। কর্মজীবনে তিনি ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত সেখানে এবং ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালে অনারারি চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেন। ২০০৩ সালে অনুষ্ঠিত পৌর নির্বাচনে জিতে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার প্রথম নারী মেয়র নির্বাচিত হন আইভী।
নির্বাচনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের এ বি এম সিরাজুল মামুন (দেয়ালঘড়ি), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির রাশেদ ফেরদৌস (হাতঘড়ি), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মো. জসিম উদ্দিন (বটগাছ) ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী কামরুল ইসলাম (ঘোড়া) মেয়র পদে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেন।
সূত্র: দৈনিক ইনকিলাব